কসমের কাফফারার রোযা কি লাগাতার রাখা জরুরী

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসরোজা১৩ মে, ২১

প্রশ্ন

আমি বিভিন্ন সময়ে একই বিষয়ে কসম করেছিলাম। তবে তা ভঙ্গ করে ফেলি। প্রতিবার ভঙ্গ করার জন্য কাফফারা হিসেবে ৩ টি করে রোযা হিসাব করে মোট পরিমাণ হল ২৪ টি। এখন এই রোযা গুলো কি সময়-সুযোগ মত একটি একটি করে রাখা যাবে? নাকি একাধারে তিনটি তিনটি করে রাখতে হবে?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

কসমের কাফফারা শুধু রোযা রাখা নয়। আগে কসমের কাফফারা কী? তা জেনে নিনঃ

لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَٰكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الْأَيْمَانَ ۖ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ ۖ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ ۚ ذَٰلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ ۚ وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ ۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ • আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক। অথবা, তাদেরকে বস্তু প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে। যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না,সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা কাফফরা তোমাদের শপথের,যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। -সূরা মায়িদা-৮৯

উক্ত আয়াতের আলোকে কসমের কাফফারা হল- ব্যক্তি তার পরিবারকে নিয়ে মধ্যম ধরণের যে খাবার গ্রহণ করে এমন খাবার দশজন মিসকিনকে দুই বেলা খাইয়ে দিবে। অথবা দুই জোড়া কাপড় দিয়ে দিবে। যা সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা একদিনের খরচ ধরা হবে। সেই হিসেবে সদকায়ে ফিতর পরিমাণকে দশ দিয়ে গুণ দিলে যত টাকা হয়,তাই হবে কসমের কাফফারা। যেমন গত রমজানে সদকায়ে ফিতির ছিল সর্বনিম্ন ৬৫ টাকা। তো সেই হিসেবে ৬৫০ (ছয় শত পঞ্চাশ টাকা) হবে কসমের কাফফারা। এটি বর্তমান মূল্য হিসেবে ধরা হয়েছে। আগে পরে পরিবর্তিত হতে পারে। আপনার উপর কতটি কাফফারা আদায় আবশ্যক? তা নির্ণয় করে হিসেবে করে টাকা দান করে দিতে হবে। যদি টাকা দিয়ে কাফফারা আদায় করতে সক্ষম না হন। তাহলেই কেবল আপনার উপর প্রতি কাফফারার জন্য তিনটি করে রোযা রাখা আবশ্যক। আর এ তিনটি করে রোযা লাগাতার রাখতে হবে। মাঝখানে একদিন ও বাদ গেলে আবার নতুন করে তিনটি রাখতে হবে। কসমের কাফফারার রোযা লাগাতার রাখতে হয়। মাঝখানে বাদ দেবার সুযোগ নেই। বাদ গেলে নতুন করে আবার শুরু করতে হবে।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي آيَةِ كَفَّارَةِ الْيَمِينِ قَالَ: «هُوَ الْخِيَارُ فِي هَؤُلَاءِ الثَّلَاثِ الْأُوَلِ، فَإِنْ لَمْ يَجِدْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مُتَتَابِعَاتٍ • হযরত ইবনে আব্বাস e থেকে কসমের কাফফারার আয়াত সম্পর্কে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রথম তিনটির বিষয়ে এখতিয়ার আছে। যদি তাতে সক্ষম না হয়, তাহলে লাগাতার তিনদিন রোযা রাখবে। -সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৩১৮২; মারিফাতুস সুনান ওয়াল আছার, হাদীস নং-১৯৫৭৫

عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّهُ كَانَ لَا يُفَرِّقُ صِيَامَ الْيَمِينِ الثَّلَاثَةِ أَيَّامٍ • হযরত আলী e থেকে বর্ণিত। তিনি কসমের কাফফারায় তিন দিন রোযার মাঝে কোন দিন বাদ দিতেন না। -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১২৩৬৫

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • رد المحتار, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৭১৪
  • التحرير المختار, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৩

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৩ মে, ২১