কবরের উপর রাস্তা করা

ইসলামী জিন্দেগীবিবিধ২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

বিশ বছর আগে আমার দাদা মৃত্যু বরণ করেন, তখন সবার ধারণা ছিল যে, রাস্তার পাশে কবর দিলে ভাল হয়, কারণ রাস্তা দিয়ে অনেক বুযুর্গ লোক যাতায়াত করে, তাই তারা কবর দেখে যদি তার জন্য দু‘আ করে যায়, আর সেই দু‘আ যদি আল্লাহ কবুল করেন, তাহলে বেহেশতে যেতে পারে। সমাজে এই ধরনের ধারণা তখন ছিল। এখনও আছে। এ কারণেই তখন রোডের পাশেই দাদার কবর দেয়া হয়; কিন্তু এখন জানতে পারলাম এই কবরের উপর দিয়ে বিশ্বরোড হবে, এজন্য আমরা খুবই চিন্তিত এবং ব্যথিত। কি করলে এর সমাধান হবে?

কবর যেহেতু থাকছে না তাই আমার দাদীকে অন্য কোথাও কবর দেয়া যাবে কিনা? কারণ, স্বামী-স্ত্রী তো পাশাপাশিই কবর দেয়া হয়।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

যে কোন স্থান থেকে মৃত ব্যক্তির জন্য দু‘আ করলে বা সাওয়াব পৌঁছানোর নিয়তে কুরআন শরীফ পড়লে বা দান করলে মুর্দার নিকট তার সাওয়াব পৌঁছে যায়। এর জন্য কবরের পাশে যাওয়া বা রাস্তার পাশে কবর দেয়া জরুরী নয়। তবে সম্ভব হলে মুর্দাকে কোন নেককার লোকদের কবরের পাশে দাফন করা উত্তম। কোন ব্যক্তি মালিকানা গোরস্থানের কবর যদি এরকম পুরাতন হয় যে, তার মধ্যে লাশ সম্পূর্ণ মাটিতে পরিণত হয়ে যায়, তাহলে তা আর কবরস্থানের হুকুম থাকে না। বরং সাধারণ জমিতে পরিণত হয়ে যায়। তখন সেখানে অন্যান্য জমির মত চাষাবাদ করা, গাছপালা রোপন করা, বাড়ী-ঘর বা মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করা, রাস্তা-ঘাট তৈরী করা এসব জায়িয আছে। আর কবরস্থানের যে সম্মান করতে হয় তা মূলত মুর্দা ব্যক্তির সম্মানার্থেই। যখন মুর্দা মাটিতে পরিণত হয়ে যায়, তখন আর এমন খালি জমিনের কোন সম্মান করার হুকুম থাকে না। বিজ্ঞ আলেমগণের মতে আমাদের দেশের লাশ সাধারণত ১০/১২ বছরের মধ্যে পঁচে গলে মাটির সাথে মিশে যায়।

আপনার দাদার কবর যেহেতু বিশ বছরের পুরাতন, তাই তার উপর ‍দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করাতে শরী‘আতের দৃষ্টিতে কোন অসুবিধা নেই। এতে মৃত ব্যক্তি আপনার দাদারও কোন ক্ষতি হবে না।

আর স্বামী-স্ত্রী বা আত্মীয়-স্বজনদের কবর একত্রে থাকা মুস্তাহাব বা ভাল। যা পালন না করতে পারলে কোন গুনাহ নেই। অতএব, আপনার দাদীর কবর দাদার কবর থেকে দূরে অন্যত্র দেয়াতে কোন অসুবিধা নেই।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • মিশকাত, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৭৮
  • ফাতাওয়া আলমগীরী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৬৬
  • ফাতাওয়া রাহীমিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৯৫
  • ফাতাওয়া মাহমূদিয়া, খন্ড: ১০, পৃষ্ঠা: ৩১৩
  • ফাতাওয়া মাহমূদিয়া, খন্ড: ১০, পৃষ্ঠা: ৩৯৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১