লাশ কবরে রাখার সময় আমরা যে, সূরাযে ত্বহা এর ৫৫ নং আয়াত তিলাওয়াত করে থাকি। এর কোন ভিত্তি আছে কি? কিছু আহলে হাদীস ভাই এটাকে বিদআত বলছেন। এ ব্যাপারে আপনাদের মতামত জানতে চাচ্ছি।
- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -
হ্যাঁ, এ আমলের ভিত্তি রয়েছে। রাসূল c তাঁর মেয়ে উম্মে কুলসুম e কে কবরে রাখার সময় এ দুআ পড়েছেন। হাদীসে এসেছে- عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: لَمَّا وُضِعَتْ أُمُّ كُلْثُومٍ ابْنَةُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقَبْرِ. قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ”مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ، وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى • হযরত আবু উমামা e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূল c এর মেয়ে উম্মে কুলসুম e কে কবরে রাখা হয়, তখন রাসূল c পড়েন মিনহা খালকনাকুম ওয়াফীহা নুয়ীদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২১৮৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-৩৪৩৩; সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৬৭২৬; খুলাসাতুল আহকাম, হাদীস নং-৩৬৫১; জামেউল মাসানীদ ওয়াস সুনান, হাদীস নং-১১০২৪; মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-৪২৩৯; কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-১৮৮১; আলমুসনাদুল জামে, হাদীস নং-৫২৫৩
মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসকে জঈফ তথা দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন।
দ্রষ্টব্য- ইমাম বায়হাকী i , (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী-৩/৪০৯); ইমাম নববী i (খুলাসা-২/১০২২); ইবনুল মুলাক্কিন i , (আলবাদরুল মুনীর-৫/৩১৩); আল্লামা হায়সামী i (মাযমাউজ যাওয়ায়েদ- বর্ণনা নং-৪৬); ইবনে হাজার আসকালানী i (আততালখীসুল হাবীর-২/৬৯১); আল্লামা সানআনী i (সুবুলুস সালাম-২/১৭৫); শাওকানী i (নাইলুল আওতার-৪/১২৭)।
সকল মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসকে জঈফ বলে মন্তব্য করলেও কেউ একে জাল বা বানোয়াট বলে মন্তব্য করেননি। তাই এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে রাসূল c থেকে সুনিশ্চিত প্রমাণিত সুন্নত না মনে করে এমনিতে আমল করাতে কোন সমস্যা নেই। এ আমলকে বিদআত বলা দ্বীনী বিষয়ে বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছু নয়। যে ব্যক্তি রাসূল c থেকে প্রমাণিত শক্তিশালীভাবে প্রমাণিত বিষয়ের সাথে সাথে দুর্বল বর্ণনাও আমলে আনতে চায়, সে ব্যক্তিই প্রকৃত নবীপ্রেমিক এবং হাদীসের অনুসারী। আর খুঁজে খুঁজে রাসূল c থেকে প্রমাণিত আমলকে বর্জনকারীর নাম সুন্নত বিদ্বেষী হতে পারে, আহলে হাদীস কখনোই হতে পারে না।
- والله اعلم باالصواب -