কবরে মাটি দেবার সময় “মিনহা খালাকনাকুম” পড়া কি বিদআত

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসমৃত্যু ও আনুষঙ্গিক১৬ মে, ২১

প্রশ্ন

লাশ কবরে রাখার সময় আমরা যে, সূরাযে ত্বহা এর ৫৫ নং আয়াত তিলাওয়াত করে থাকি। এর কোন ভিত্তি আছে কি? কিছু আহলে হাদীস ভাই এটাকে বিদআত বলছেন। এ ব্যাপারে আপনাদের মতামত জানতে চাচ্ছি।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

হ্যাঁ, এ আমলের ভিত্তি রয়েছে। রাসূল c তাঁর মেয়ে উম্মে কুলসুম e কে কবরে রাখার সময় এ দুআ পড়েছেন। হাদীসে এসেছে- عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: لَمَّا وُضِعَتْ أُمُّ كُلْثُومٍ ابْنَةُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقَبْرِ. قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ”مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ، وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى • হযরত আবু উমামা e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূল c এর মেয়ে উম্মে কুলসুম e কে কবরে রাখা হয়, তখন রাসূল c পড়েন মিনহা খালকনাকুম ওয়াফীহা নুয়ীদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২১৮৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-৩৪৩৩; সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৬৭২৬; খুলাসাতুল আহকাম, হাদীস নং-৩৬৫১; জামেউল মাসানীদ ওয়াস সুনান, হাদীস নং-১১০২৪; মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-৪২৩৯; কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-১৮৮১; আলমুসনাদুল জামে, হাদীস নং-৫২৫৩

মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসকে জঈফ তথা দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন।

দ্রষ্টব্য- ইমাম বায়হাকী i , (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী-৩/৪০৯); ইমাম নববী i (খুলাসা-২/১০২২); ইবনুল মুলাক্কিন i , (আলবাদরুল মুনীর-৫/৩১৩); আল্লামা হায়সামী i (মাযমাউজ যাওয়ায়েদ- বর্ণনা নং-৪৬); ইবনে হাজার আসকালানী i (আততালখীসুল হাবীর-২/৬৯১); আল্লামা সানআনী i (সুবুলুস সালাম-২/১৭৫); শাওকানী i (নাইলুল আওতার-৪/১২৭)।

সকল মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসকে জঈফ বলে মন্তব্য করলেও কেউ একে জাল বা বানোয়াট বলে মন্তব্য করেননি। তাই এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে রাসূল c থেকে সুনিশ্চিত প্রমাণিত সুন্নত না মনে করে এমনিতে আমল করাতে কোন সমস্যা নেই। এ আমলকে বিদআত বলা দ্বীনী বিষয়ে বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছু নয়। যে ব্যক্তি রাসূল c থেকে প্রমাণিত শক্তিশালীভাবে প্রমাণিত বিষয়ের সাথে সাথে দুর্বল বর্ণনাও আমলে আনতে চায়, সে ব্যক্তিই প্রকৃত নবীপ্রেমিক এবং হাদীসের অনুসারী। আর খুঁজে খুঁজে রাসূল c থেকে প্রমাণিত আমলকে বর্জনকারীর নাম সুন্নত বিদ্বেষী হতে পারে, আহলে হাদীস কখনোই হতে পারে না।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৬ মে, ২১