কবর যিয়ারত

ইসলামী জিন্দেগীবিবিধ২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

ইসলামের দৃষ্টিতে মহিলাদের কবর যিয়ারত জায়িয কিনা? কবর যিয়ারতের সঠিক তরীকা কি? ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সমস্ত মৃত ব্যক্তিদের রূহ সমূহ এ পৃথিবীতে আগমন করে থাকে এবং জুম‘আর দিনে সমস্ত কবরবাসীদের আযাব মাফ করে দেয়া হয়।’ ইসলামের দৃষ্টিতে কথাগুলো কি ঠিক?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

মহিলাদের মধ্যে সৃষ্টিগতভাবে ধৈর্য-সহ্য কম হয়ে থাকে, যার দরুন কবর দেখে বা মুর্দার কথা স্বরণ করে কান্না-কাটি, চিল্লা-চিল্লি করার সম্ভাবনা রয়েছে। সাথে সাথে বিনা জরুরতে মহিলাদের জন্য বাড়ী হতে বের হওয়াটাই অসংখ্য ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাই কবর যিয়ারতের জন্য তাদেরকে শরী‘আতে অনুমতি দেয়া হয়নি।

আর কবর যিয়ারতের তরীকা হলো, কবরের কাছে গিয়ে সম্ভব হলে, মুর্দার পায়ের দিক দিয়ে যেয়ে চেহারা বরাবর এসে কিবলার দিকে পিঠ করে কবরের দিকে মুখ করে দাঁড়াবে এবং এভাবে সালাম বলবে- السلام عليكم يا اهل القبور من المسلمين والمؤمنين انتم لنا سلف ونحن لكم تبع وانا ان شاء الله بكم لاحقون يرحم الله المستقدمين منا والمستأخرين اسأل الله لنا ولكم العافية يغفر الله لنا ولكم ويرحمنا الله واياكم • অতঃপর ‍কুরআনের আয়াত, সূরা বিশেষভাবে সূরা ইখলাস, সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরছী, আমানার রাসূলু, সূরা ইয়াসীন, সূরা মুলক ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব হয় পড়বে। অতঃপর উক্ত ‍দু‘আ কালাম এর সাওয়াব কবরবাসীদের নামে বখশে দিবে। আর সাওয়াব পৌঁছানোর জন্য হাত উঠানোর কোন প্রয়োজন নেই। তবে যদি একান্ত হাত উঠাতে হয়, তাহলে কবরের দিকে পিঠ করে কিবলার দিকে মুখ করে নিবে।

উল্লেখ্য, কবর যিয়ারতের জন্য উত্তম দিন হলো, জুম‘আর দিন। তবে তার একদিন আগে বা পরে এবং সোমবার দিনকেও কবর যিয়ারতের জন্য বরকতের দিন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সকল মৃত ব্যক্তিদের রূহ পৃথিবীতে আগমন করে থাকে- এ কথাটি একেবারেই অবাস্তব। কুরআন-হাদীসে এর কোন প্রমাণ নেই। মুসলমানদের জন্য এ ধরনের বিশ্বাস রাখা কখনও ঠিক হবে না। জুম‘আর দিন সমস্ত কবরবাসীদের আযাব মাফ করে দেয়া হয়- এমন কথাও ঠিক নয়। তবে জুম‘আর দিন কেউ মারা গেলে তার কবরের আযাব মাফ হওয়ার কথা হাদীসে পাওয়া যায়।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৪২
  • ফাতাওয়া দারুল উলূম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৫০
  • মালাবুদ্দা মিনহু, পৃষ্ঠা: ৭৫
  • ফাতাওয়া রশীদিয়া, পৃষ্ঠা: ২৩১
  • মিশকাত, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৫৪
  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৪২
  • ফাতাওয়া মাহমুদিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৬৮
  • আহসানুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৮৬
  • ফাতাওয়া দারুল উলূম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪১৮
  • ফাতাওয়া দারুল উলূম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৪৯
  • আশরাফুল জাওয়াব, পৃষ্ঠা: ১৫৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১