ওলী বা অভিভাবক ছাড়া বিবাহ শুদ্ধ হয় না

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবাহ-তালাক১২ মে, ২১

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম। আমি ইউনিভার্সিটি ফাইনাল ইয়ারে পড়ছি। ৩ বছর আগে আমাকে আমার পারিবারিক পরিচিত এক ভদ্রলোক বিবাহের প্রস্তাব দেন। আমি আমার পরিবারে সেটা জানালে তারা আমার পছন্দ মেনে নিয়ে আমার বড় বোনের বিয়ে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। এই সময়ে আমাদের সম্পর্ক গভীর হতে থাকলে আমরা সতর্ক হই এবং এক জন ইমাম এর পরামর্শে সাক্ষী সমেত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। কিছু মাস আগে আমি একটি হাদিস জানতে পারিঃ

"হযরত আয়েশা e থেকে বর্ণিত রাসূল c বলেন, কোন মহিলা যে তার অভিভাবকের অনুমতি ব্যতিত বিয়ে করে তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল। কিন্তু যদি তারা রাত্রিযাপন করে তাহলে ঐ মহিলা মহরের অধিকারী হবে স্বামীর সাথে মেলামেশা করার কারণে। কোন বিবাদের ক্ষেত্রে যার কোন অভিভাবক নেই, বিচারকই তার অভিভাবক হবে।" -তিরমিজি, হাদীস- ১১০২; আবু দাউদ, হাদীস- ২০৮৩; ইবনে মাজাহ, ১৮৭

আমি এই ব্যাপারে আমার স্বামীকে অবহিত করলে তিনি বলেন, ওয়ালি ব্যতিত বিয়ে হবে না এটি লা মাজহাবি ও অন্য তিন মাজহাবের মতবাদ, হানাফী মাজহাব মতে আমাদের বিয়ে বৈধ এবং এ ব্যাপারে তিনি দলীল দেন। আমি ইতিমধ্যে আমার পরিবারে আবারো আমার সমস্যার কথা বলেছি, তারা আমাকে অপেক্ষা করতে বলেছেন কেননা আমার বোনের এখনো বিয়ে হয়নি। আমার স্বামীর পরিবার থেকেও আমার বাবার কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমি আমার স্বামীর সাথে দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ রেখেছি, কিন্তু তিনি মানতে চাইছেন না এবং আমার জন্য পরিস্থিতি দিনদিন কঠিন হচ্ছে। আমি এখন কি করব? আমার বিয়ে কি বৈধ হয়েছে?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক। তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রকে বিবাহ করে, যার কারণে মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে গেছে। যদিও আপনাদের পরিবার কিছুই জানে না। কিংবা যদি তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে। عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَال: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا • হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। -মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَال: ”جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَت: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَال: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ

হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল c এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল c তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল c মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। -সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১ 2469 – حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاس: ”أَنَّ جَارِيَةً بِكْرًا أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرَتْ أَنَّ أَبَاهَا زَوَّجَهَا وَهِيَ كَارِهَةٌ فَخَيَّرَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ” • হযরত ইবনে আব্বাস e থেকে বর্ণিত। কুমারী মেয়ে রাসূল c এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমার অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে, তখন রাসূল c সে মেয়েকে অধিকার দিলেন, (যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে রাখতেও পারে)। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৬, সুনানুল কুবরা নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৬৬, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৬৬

عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَال: جَاءَتْ فَتَاةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَت: ” إِنَّ أَبِي زَوَّجَنِي ابْنَ أَخِيهِ، لِيَرْفَعَ بِي خَسِيسَتَهُ، قَال: فَجَعَلَ الْأَمْرَ إِلَيْهَا، فَقَالَت: قَدْ أَجَزْتُ مَا صَنَعَ أَبِي، وَلَكِنْ أَرَدْتُ أَنْ تَعْلَمَ النِّسَاءُ أَنْ لَيْسَ إِلَى الْآبَاءِ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ • “ হযরত বুরাইদা e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী c এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল c বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, (অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে) তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের (চূড়ান্ত) মতের অধিকার নেই্ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫)

উল্লেখিত হাদীস ছাড়াও আরো এমন অনেক হাদীস রয়েছে, যা স্পষ্ট ভাষায় প্রমাণ করে যে, বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবক নয়, প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে পিতা বা অভিভাবকের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। সুতরাং প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করে নিলে তা সম্পন্ন হয়ে যাবে। বিপরীতমুখী হাদীসের জবাব কি? যে সকল হাদীস দ্বারা একথা বুঝা যায় যে, অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সম্পন্ন হয় না, সেগুলোর অনেকগুলো জবাব মুহাদ্দিসীনে কেরাম ও ফুক্বাহায়ে কেরাম দিয়েছেন।

প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি আমরা দেখে নেই, তাহলে উত্তর দিতে সুবিধা হবে عَنْ عَائِشَةَ، قَالَت: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: «أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَكَحَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهَا، فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ»، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ «فَإِنْ دَخَلَ بِهَا فَالْمَهْرُ لَهَا بِمَا أَصَابَ مِنْهَا، فَإِنْ تَشَاجَرُوا فَالسُّلْطَانُ وَلِيُّ مَنْ لَا وَلِيَّ لَهُ» • হযরত আয়শা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন, যে মহিলাকে তার অভিভাবক বিয়ে দেয়নি, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল। এরপর স্বামী যদি তার তার সাথে মিলামিশা করে তবে সে মহরের অধিকারী হবে স্বামী তার সাথে (হালাল পদ্ধতিতে) মেলামেশা করার কারণে। আর যদি তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে যার অভিভাবক নেই, বাদশাই তার অভিভাবক বলে বিবেচিত হবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৮৭৯, সুনানে তিরামিজী, হাদীস নং-১১০২, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৯ হাদীসটির বিষয়ে মন্তব্য ইমাম বুখারী i বলেন, হাদীসটি মুনকার। -আলইলালুল কাবীর-২৫৭ ইমাম তিরমিজী i বলেন, হাসান। -সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০২ ইমাম তাহাবী i বলেন, হাদীসটি ফাসিদ। -শরহু মাআনিল আসার-৩/৭ ইবনে কাত্তান i বলেন, হাদীসটি হাসান। -আলওয়াহমু ওয়ালইহামু-৪/৫৭৭

জবাব নং ১ঃ আমরা শক্তিশালিত্বের দিক থেকে আমাদের বর্ণিত হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। হযরত আয়শা সিদ্দিকা e থেকে বর্ণিত হাদীসটির বিষয়ে ইমাম বুখারী i থেকে মুনকার হওয়ার এবং ইমাম তাহাবী i থেকে ফাসিদ হওয়ার কালাম রয়েছে। তাই আমরা এর উপর আমল করি না। পক্ষান্তরে আমাদের উপরে বর্ণিত সহীহ মুসলিম ও মুয়াত্তা মালিকের বর্ণনাটি সহীহ।

জবাব নং ২ঃ এ হাদীস দ্বারাই বুঝা যাচ্ছে যে, এখানে বিবাহ বাতিল হয়ে যাওয়া উদ্দেশ্য নয়। কারণ হাদীসের শেষাংশে বলা হচ্ছে, স্ত্রী মহরের অধিকারী হবে। যদি বিবাহ শুদ্ধই না হতো, তাহলে মোহর আবশ্যক হওয়ার কথা আসছে কেন? মোহরতো বিবাহের মাধ্যমে আবশ্যক হয়। বিবাহ ছাড়া আর্থিক জরিমানার জন্য ব্যবহৃত হয় আরবী عقرا শব্দ ব্যবহৃত হয়। অথচ এখানে ব্যবহৃত করা হয়েছে। মোহর শব্দ। যা বিবাহের সাথে খাস। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে এখানে আসলেই বিবাহ বাতিল হয়ে যায়, এটি উদ্দেশ্য নয়। বরং ধমকী দেয়া উদ্দেশ্য। যেন অভিভাবকদের না জানিয়ে মেয়েরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হয়।

জবাব নং ৩ঃ أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، زَوَّجَتْ حَفْصَةَ بِنْتَ عَبْدِ الرَّحْمنِ، الْمُنْذِرَ بْنَ الزُّبَيْرِ. وَعَبْدُ الرَّحْمنِ غَائِبٌ بِالشَّأْمِ • যেমন প্রশ্নে উল্লেখিত অভিভাবক ছাড়া মহিলা কর্তৃক বিয়ে সম্পন্ন না হওয়ার হাদীসটি হযরত আয়শা সিদ্দিকা e এর। অথচ খোদ আয়শা e তার ভাই আব্দুর রহমানের মেয়ে হাফসাকে তার অভিভাবক আব্দুর রহমানকে ছাড়াই নিজে বিয়ে দিয়েছিলেন মুনজির বিন যুবায়েরের সাথে। -মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-২০৪০, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৪২৫৫, সুনানুস সাগীর লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২৩৭৪, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৩৫২২, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৩৬৫৩, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৫

সুতরাং বুঝা গেল যে, উক্ত হাদীস দ্বারা খোদ বর্ণনাকারী হযরত আয়শা e নিজেই বিবাহ শুদ্ধ হয় না একথা বুঝেন নি। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বিয়ে অসম্পূর্ণ হয় অভিভাবক ছাড়া। কারণ, যে অভিভাবক মেয়েকে লালন পালন করল, তাকে না জানিয়ে বিয়ে করাটাতো অসম্পূর্ণই। তাই বলা হয়েছে তা বাতিল। বাতিল মানে অসম্পূর্ণ। যেমন আরেক হাদীসে এসেছে- عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَال: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: «أَيُّمَا مَمْلُوكٍ تَزَوَّجَ بِغَيْرِ إِذْنِ سَيِّدِهِ، فَهُوَ عَاهِرٌ» • হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল c ইরশাদ করেছেন, যে গোলাম মনীবের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করে তাহলে সে জিনাকারী। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৭৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৪২১২, সুনানে দারামী, হাদীস নং-২২৭৯, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১১১, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-২৭০৫

আসলে কি গোলাম জিনাকারী হবে? একথাতো কেউ বলেন না। এখানে যেমন সবাই বলেন যে, এর দ্বারা ধমকী দেয়া উদ্দেশ্য। ঠিক তেমনি যেন কোন মেয়ে তার অভিভাবক ছাড়া বিয়ে না করে, কারণ মেয়ে মানুষ হওয়ার কারণে সে পাত্র নির্ণিত করতে ভুল করতে পারে, তাই সতর্ক করে বলা হয়েছে তার বিবাহ বাতিল হওয়ার সমতূল্য। যেমন গোলামের বিবাহ জিনার সমতূল্য। আসলে যিনা নয়।

জবাব নং ৪ঃ আসলে বাতিল বলে হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে, যদি মেয়ে গায়রে কুফুতে বিয়ে করে, তাহলে তার বিয়ে অভিভাবক এসে বাতিল করে দিতে পারে। সে হিসেবে তার বিয়েকে বাতিল বলা হয়েছে।

জবাব নং-৫ঃ বাতিল দ্বারা উদ্দেশ্য হল, যদি নাবালেগ বা পাগল মেয়ে বিয়ে করে, তাহলে তার বিবাহ বাতিল। এভাবে আমরা উভয় হাদীসের উপর আমল করতে পারি।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১২ মে, ২১