উমরী কাযা নামায

ইসলামী জিন্দেগীনামায২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

উমরী কাযা নামাযের নিয়ম কানুন জানতে ইচ্ছুক।

উমরী কাযার মাগরিব ও বিতর নামাযের নিয়ম দয়া করে জানাবেন। অনেকে বলে থাকেন যে, এগুলোর উমরী কাযা চার রাকা‘আত পড়তে হয়।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ওয়াক্তিয়া নামায ও উমরী কাযার নিয়ম-কানুনে তেমন কোন পার্থক্য নেই। তবে নিয়্যাতের বেলায় এভাবে বলবে যে আমার যিন্দেগীর প্রথম ফযর/যুহর/আসর-এর কাযা আদায় করছি। প্রত্যেক ওয়াক্তে এভাবে নিয়ত করতে থাকবে। কত দিনের উমরী কাযা পড়বে তার হিসাব করার নিয়ম হচ্ছে প্রথমে গভীর ভাবে চিন্তা করবে। চিন্তা করে নিজের প্রবল ধারণা অনুযায়ী কত বছর কতমাস হয় তার সিদ্ধান্ত করে নিবে। এরপর ‍উক্ত হিসাবটা নোট করে নিবে এবং এ হিসাবকেই চূড়ান্ত হিসেবে ধরে নিতে হবে। অতঃপর নিজের সুবিধা মত যখন যে নামাযের কাযা পড়ার সুযোগ হয় তাই পড়বে। তবে প্রত্যেক ওয়াক্তের সাথে ঐ ওয়াক্তের উমরী কাযা পড়া হিসাব রাখার জন্য সুবিধাজনক। কোন ওয়াক্ত ছুটে গেলে রাত্রে তা পুরা করে নিবে। এভাবে এক দিনে কমপক্ষে এক দিনের উমরী কাযা করে নিবে। এভাবে যা পড়া হবে তা থেকে বাদ দিবে। এভাবে সব নামায হয়ে গেলে ভাল। নতূবা যিন্দেগীর শেষ মুহুর্তে অবশিষ্ট নামাযের ফিদিয়া দেয়ার ওসীয়ত করে যাবে। উল্লেখ্য যে, সুন্নাত নামাযের কাযা নেই। শুধু ফরয ও বিতরের কাযা করতে হবে

واذا كثرت الفوائت يحتاج لتعيين كل صلاة يقضيها لتزاحم الفروض والاوقات...... فاذا اراج تسهيل الامر عليه نوى اول ظهر عليه ادرك وقته ولم يصله فاذا نواه كذلك فيما يصليه يصير اولا فيصح بمثل ذلك. (مراقي الفلا:362)

মাগরিব ও বিতরের কাযা তিন রাকা‘আত পড়তে হবে চার রাকা‘আত পড়া জায়িয হবে না। বরং তিন রাকা‘আতের নিয়মেই পড়তে হবে। অর্থাৎ বিতর হলে বিতরের মত, আর মাগরিব হলে মাগরিবের মত। এগুলোর জন্য আলাদা কোন নিয়ম নেই। পূর্বোল্লেখিত নিয়মেই হিসাব ও নিয়্যত করবে। অবশ্য বিতরের কুনূতের পূর্বে শুধু তাকবীর বলবে হাত উঠাবে না।

উল্লেখ্য, যে ব্যক্তি নামায কাযা না থাকা সত্বেও এই নিয়তে কাযা নামায পড়ে যে,“আমার যিম্মায় কাযা থাকতেও পারে তাই সতর্কতামূলক কাযা পড়ছি। ঐ ব্যক্তির জন্য হুকুম হল, সে মাগরিব এবং বিতরের নামায তিন রাকা‘আতের জায়গায় চার রাকা‘আত পড়বে। কারণ, তখন তার উক্ত নামাযটি নফল হিসাবে গণ্য হবে। আর নফল তিন রাকা‘আত হয় না বিধায় চার রাকা‘আত পড়বে। উল্লেখ্য যে, এক্ষেত্রে বিতেরের মধ্যে দোয়ায়ে কুনূত পড়বে ও তৃতীয় রাকা‘আতে তাশাহহুদ পরিমাণ বসে চতুর্থ রাকা‘আত নফলের নিয়তে পড়বে।

যেরূপ ভাবে ওয়াক্তিয়া ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকা‘আতে সূরায়ে ফাতিহার পর অন্য সূরা পড়তে হয় তদ্রুপ কাযা নামাযেও শুধু প্রথম দু’রাকা‘আতে সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। আর শেষের এক বা দুই রাকা‘আতে শুধু সূরায়ে ফাতিহা পড়তে হবে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৭
  • খাইরুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৬১১
  • ফাতাওয়া দারুর উলূম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৫০
  • তাহত্বাভী, পৃষ্ঠা: ২৪৩
  • মারাকিল ফালাহ, পৃষ্ঠা: ৩৬২
  • হিদায়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৫৫
  • হালবী কাবীর, পৃষ্ঠা: ৫২৯
  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৬৮
  • দারুল উলূম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৩২
  • ইমদাদুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৩৭
  • কিফায়াতুল মুফতী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৩৭

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১