ইশার নামাযের উত্তম ও সর্বশেষ সময় কখন

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসনামায১৭ মে, ২১

প্রশ্ন

ইশার নামাযের সময়সীমা কতটুকু?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ইশার নামাযের সময় পশ্চিমাকাশের লালিমা দূরিভূত হয়ে যে শাদা আভা দেখা দেয় তা দূরিভূত হবার পর থেকে নিয়ে রাতের তিন ভাগের এক ভাগের মাঝে পড়া মুস্তাহাব। তিনভাগ অতিক্রান্ত হবার পর থেকে নিয়ে অর্ধেক রাত পর্যন্ত পড়া জায়েজ। এতে কোন কারাহাত নেই। আর অর্ধেক রাত থেকে নিয়ে সুবহে সাদিক পর্যন্ত পড়া মাকরূহের সাথে জায়েজ। অর্থাৎ নামায আদায় হয়ে যাবে। বাকি বিলম্ব করার কারণে মাকরূহ হবে। -হেদায়া-১/৫০-৫১, শরহে নুকায়া-১/৫৩-৫৫, কাবীরী-২২৯-২৩৫. তামহীদ-৮/৯২

উদাহরণতঃ (মাসআলাটি বুঝার জন্য উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে যা বর্তমান সময়ের সাথে মিলিয়ে নিতে হবে।) সূর্য ডুবে যায় সন্ধ্যা ৭টায়। আর সূর্য ডুবার পর পশ্চিমাকাশের শাদা আভা দূরিভূত হয় ৭টা ৪৫ মিনিটে। আর সুবহে সাদিক শুরু হয় ৪টায়। এবার আপনি বের করুন। সূর্য অস্ত যাওয়া থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত রাত কয় ঘন্টা? নিশ্চয় ৯ ঘন্টা। তাহলে রাতের তিন ভাগের একভাগ তথা এক তৃতিয়াংশ সময় হচ্ছে ১০ টা। আর অর্ধেক রাত হবে সাড়ে এগারটা তথা এগারটা ত্রিশ মিনিট। আর সুবহে সাদিকতো জানাই আছে। এবার দেখুন মাসআলাটি বুঝতে সহজ হবে। উপরোক্ত সময় অনুপাতে এশার নামায ৭টা পয়তাল্লিশ মিনিট থেকে নিয়ে রাত ১০টার মাঝে পড়া মুস্তাহাব। আর ১০টা থেকে নিয়ে রাত সাড়ে এগারটার মাঝে পড়া মাকরূহ হওয়া ছাড়াই জায়েজ। আর রাত সাড়ে এগারটা থেকে রাত ৪টার মাঝে পড়া মাকরূহের সাথে জায়েজ।

আশা করি এবার মাসআলাটি পরিস্কার হয়েছে। দলীল হযরত আবু হুরায়রা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন- وَإِنَّ أَوَّلَ وَقْتِ الْعِشَاءِ الْآخِرَةِ حِينَ يَغِيبُ الْأُفُقُ، وَإِنَّ آخِرَ وَقْتِهَا حِينَ يَنْتَصِفُ اللَّيْلُ، • নিশ্চয় ইশার নামাযের সময় শুরু হয় পশ্চিমাকাশের শাদা আভা দূরিভূত হওয়া থেকে। আর শেষ সময় হল অর্ধেক রাত অতিক্রান্ত হলে। (মানে এটি মাকরূহ ছাড়া মুবাহ সময়, এরপরও সময় থাকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত, কিন্তু সেটি মাকরূহ ওয়াক্ত, তাই সময় শুধু অর্ধেক রাত পর্যন্ত বলা হয়েছে)। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৭১৭২, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৫১, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৯৪১

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُؤَخِّرُوا العِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ أَوْ نِصْفِهِ • হযরত আবূ হুরায়রা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন, উম্মতের কষ্ট হওয়ার ভয় যদি আমার না হত তাহলে আমি তাদেরকে আদেশ করতাম, তারা যেন ইশার নামায রাতের এক তৃতীয়াংশ বা অর্ধেক পর্যন্ত বিলম্বিত করে। -সুনানে তিরমিজী-১/২৩, হাদীস নং-১৬৭

عَنْ عُبَيْدِ بْنِ جُرَيْجٍ , أَنَّهُ قَالَ لِأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: مَا إِفْرَاطُ صَلَاةِ الْعِشَاءِ؟ قَالَ: «طُلُوعُ الْفَجْرِ» • হযরত আবূ হুরায়রা e কে জিজ্ঞাসা করা হল, ইশার নামাযের সময় কখন শেষ হয়? তখন তিনি বলেন, ফজরের সময় হলে। -তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৯৫৯; সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৭৬২

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৭ মে, ২১