ইমাম আবু হানীফা i এর ছাত্রগণ কেন তার উস্তাদের বিরোধীতা করলেন

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবিধ২৭ নভেম্বর, ২৩

প্রশ্ন

সাহেবাইন (ইমাম আবূ ইউসুফ

এবং ইমাম মুহাম্মাদ) রহিমাহুমাল্লাহ ইমাম আবূ হানীফা i এর শাগরেদ

ছিলেন, তদুপরিও ফিকহের কিতাব সমূহে অনেক অনেক মাসআলা এমন যে, তাঁরা ইমাম

আবূ হানীফা i থেকে ভিন্ন মত দিয়েছেন। এটা কি ফিক্বহে হানাফীর খুঁত নয়

কি?

আর সাহিবাইন i উভয়ে কি ইমাম আবূ আবূ হানীফা i এর মুকাল্লীদ ছিলেন না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

এমন কথা যারা বলে থাকেন, তারা আসলে বিরোধিতা আর গবেষণার অর্থই বুঝেন না। এ বিষয়ে দু’টি পয়েন্ট ভাল করে বুঝতে হবে। যথা- ১ ইমাম আবু হানীফা i যদি শুধু নিজের মতকেই প্রতিষ্ঠা করতে চাইতেন তাহলে তার ছাত্রদের নিয়ে বোর্ড গঠন করে মাসআলার সমাধান করার কাজ হাতে নিতেন না। বরং আলবানী i এর মত ইচ্ছেমত নিজের একটি মত লিখে সেটিই জাতির সামনে উপস্থাপন করে দিতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। বরং ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা এবং কুরআন ও সুন্নাহের সঠিক উদ্দেশ্য মুসলিম উম্মাহের সামনে আসুক তিনি সেটিই চেয়েছিলেন। তাই তিনি বোর্ড করে গবেষণা করে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত প্রদাণ করতেন। যা পরিস্কার বুঝায় আমরা একজন ব্যক্তিকে নয় বরং গবেষক বোর্ডের ফাতওয়া মানি। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নয়।

২ মূলত অন্যদের কথার উপর ফাতওয়া হলেও সেটিও ইমাম আবু হানীফা i এর বক্তব্যই থাকে। কারণ তিনি যখন কোন মাসআলাকে উপস্থাপন করতেন, তখন সেই মাসআলার সম্ভাব্য হুকুম বলে দিতেন। যেমন ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ইত্যাদি। তারপর সবার মতামত জানতে চাইতেন। তখন উপস্থিত ফক্বীহগণ তাদের নিজেদের ইলম ও সমঝের আলোকে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতেন। এর মাঝে সব ক’টি বিষয়ই ইমাম আবু হানীফা i এর উপস্থাপিত হুকুম। কিন্তু তিনি নিজেও একটি হুকুমকে প্রাধান্য দিতেন। বাকিরাও তাদের মতকে বলতেন। তখন যার মতটি অধিক দলীল সমৃদ্ধ ও যৌক্তিক মনে হয় সেটির উপর সিদ্ধান্ত হতো। সেটিই ফিক্বহে হানাফী হিসেবে স্বীকৃতি পেত। আর সবাই যে মতগুলো দিত সেগুলো একেতো ইমাম আবু হানীফা i এরই একাধিক মতের একটি। আর দ্বিতীয়ত সবাই সেসব বিধানগুলো বলতেন ইমাম আবু হানীফা i এরই মূলনীতি অনুসরণ করে। তাই ইমাম আবু হানীফা i এর একমতের উল্টো ফাতওয়া হওয়ায় সেটির দ্বারা ইমাম আবু হানীফা i এর বিরোধিতা প্রমানিত হয় না। বরং ইমাম আবু হানীফা i এর কথা এবং মূলনীতিই অনুসরণ করা হয়ে থাকে। তাই এ অভিযোগ উত্থাপন করা আহমকী বৈ কিছু নয়।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৭ নভেম্বর, ২৩