আশুরার দিনের তাৎপর্য, ইতিহাস ও আমল

মাসিক আল কাউসারসিরাত ও ইতিহাস৫ এপ্রিল, ২১

প্রশ্ন

ক. আশুরার রোযার তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাই।

খ. আশুরার দিনের ফযীলত কী এবং এই দিনে রোযা রাখলে কী সওয়াব?

গ. শুনেছি, এই দিনে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। যেমন ইউনুস D মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ইউসুফ D জেল থেকে মুক্ত হয়েছেন। মুসা D দলবলে সমুদ্র পাড়ি দিয়েছেন আর ফেরআউন তার দলসহ ডুবে মরেছে। এ ঘটনাগুলি কি ঠিক?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ক. আশুরার তাৎপর্য সম্পর্কে একটি হাদীস উল্লেখ করছি। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস e বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ c মদীনায় হিজরত করার পর দেখলেন, ইহুদীরা আশুরার দিন রোযা রাখে। রাসূলুল্লাহ c তাদেরকে রোযার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তখন তারা বলেছিল, এটি মহিমান্বিত একটি দিন। এই দিনে মুসা D ও তার কওম নিস্তার পান। আর ফেরআউন ও তার দল ডুবে মারা যায়। সেই থেকে মুসা D শুকরিয়াস্বরূপ এই দিনে রোযা রাখতেন। সে হিসেবে আমরাও রোযা রাখি। তখন রাসূলুল্লাহ c বললেন, মুসা D -এর ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে আমরা অধিক হকদার। অতপর রাসূলুল্লাহ c নিজেও রোযা রাখলেন এবং অন্যদেরকে রোযা রাখার নির্দেশ করলেন।’

খ. আশুরার দিনটি মহিমান্বিত। হাদীস শরীফে এসেছে-এই দিনে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তাওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যদের তাওবা কবুল করবেন।

আর এই দিনে রোযা রাখলে পেছনের এক বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়।

গ. এই দিনে মুসা D তার কওমসহ ফেরআউনের হাত থেকে রক্ষা পান এবং ফেরআউন তার দলবলসহ সমুদ্রে ডুবে মারা যায়-একথা সত্য। এ উত্তরের ‘ক’ অংশে সহীহ বুখারীর যে বর্ণনাটি উল্লেখ করা হয়েছে তাতে একথা স্পষ্ট উল্লেখ আছে। কিন্তু প্রশ্নের অন্যান্য ঘটনা লোকমুখে প্রসিদ্ধ থাকলেও এ সম্পর্কে কোনো বিশুদ্ধ বর্ণনা নেই। প্রখ্যাত হাদীস বিশারদগণ বলেন, এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • জামে তিরমিযী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৫৭
  • সহীহ মুসলিম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৬৭
  • জামে তিরমিযী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৫৮
  • আলআছারুল মারফূআ, পৃষ্ঠা: ৯৪
  • মা সাবাতা বিসসুন্নাহ ফী আইয়ামিস সানাহ, পৃষ্ঠা: ২৫৩
  • সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ৩,৩৯০
  • মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ২,৬৪৪
  • সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ১,১২৫

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৫ এপ্রিল, ২১