আত্মশুদ্ধি অর্জনের জন্য মুরীদ হওয়া আবশ্যক

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসজায়েয-নাজায়েয১৩ এপ্রিল, ২৩

প্রশ্ন

আল্লাহর রহমতে তাবলীগ জামাতে ৩ চিল্লা সময় দিয়েছি। আমার প্রশ্ন হল আত্মশুদ্ধির জন্য অর্থাৎ কুদৃষ্টি, হিংসা, অহংকার, গীবত, রিয়া ইত্যাদি দোষ থেকে বাঁচা এবং তাকওয়া, ইখলাস, বিনয়, শোকর ইত্যাদি গুণ অর্জনের জন্য আমার কি করনীয়?

মসজিদওয়ার ৫ কাজ করা ও বছরে নেসাবি চিল্লা দেওয়াই যথেষ্ট নাকি এর সাথে সাথে কোন হক্কানি শায়েখের কাছে বায়াত হওয়া বা এসলাহী সম্পর্ক স্থাপন করার কোন প্রয়োজন আছে।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

আসলে মূল উদ্দেশ্য হল আত্মার পরিশুদ্ধায়ন। সব কাজ আল্লাহর জন্য করার মানসিকতা তৈরী। মন থেকে দুনিয়ার মোহাব্বত দূরিকরণ এবং আখেরাতের মোহাব্বত দিলে বসানো। মন থেকে সকল প্রকার আখলাকে রাজিলা তথা মন্দ স্বভাব যেমন হিংসা, বিদ্বেষ, দুনিয়ার লোভ, বংশীয় গৌরব, অহংকার, কৃপণতা ইত্যাদি দূরা। সেই সাথে আখলাকে হামিদা যেমন জিকির, সত্যবাদীতা, সততা, ন্যায়নিষ্ঠতা, ইবাদতে আগ্রহী, আখেরাতের মোহাব্বত, আল্লাহ ও রাসূলের মোহাব্বত, সুন্নতের পাবন্দী ইত্যাদি ধারণ করা জরুরী বিষয়। সহজ কথায় বললে আত্মাকে পরিশুদ্ধায়ন করা আবশ্যক বিষয়। এ পরিশুদ্ধায়ন যেভাবে অর্জিত হয় সেভাবেই অর্জিত করবে। যদি কোন হক্কানী, সুন্নতের পাবন্দ, শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী শায়েখের কাছে বাইয়াত হওয়া ছাড়াই এ আত্মশুদ্ধি অর্জিত হয়ে যায়, তাহলে কারো বাইয়াত হওয়ার দরকার নেই। এটি কোন জরুরী বিষয় নয়। জরুরী বিষয় ছিল আত্মশুদ্ধি। যা অর্জিত হয়ে গেছে। বাইয়াত হওয়া জরুরী বিষয় নয়। তাই উক্ত ব্যক্তির জন্য এর কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি নিজে নিজে তা অর্জিত না হয় তাহলে কোন হক্কানী, সুন্নতের পাবন্দ, শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী শায়েখের কাছে বাইয়াত হয়ে এ মেহনত করবে। আর স্বাভাবিকভাবে ডাক্তারের সাহচর্য ছাড়া যেমন পূর্ণ ডাক্তার হওয়া যায় না, ইঞ্জিনিয়ারের সাহচর্য ছাড়া ভাল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায় না, উস্তাদের নির্দেশনা ছাড়া কোন বিষয়ে পূর্ণ বুৎপত্তি অর্জিত হয় না, তেমনি আল্লাহ ওয়ালার সোহবত ও সাহচর্য এবং পরামর্শ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ আল্লাহ ওয়ালা হওয়া যায় না। তাই যাদের এমনিতে আত্মশুদ্ধি না হয়, তারা হক্কানী কোন পীর মাশায়েখের মুরীদ হয়ে এ মেহনত করবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে, কিছুতেই যেন পীর বা মুর্শীদকে শরীয়ত প্রণেতা নির্দিষ্ট করে না বসে। আর উক্ত পীরকে অবশ্যই সুন্নতের পাবন্দ হতে হবে। হতে হবে শরীয়তের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী। বিদআত, রুসুমাত, কুসংস্কার, মাজার, কবরপূজা, ব্যক্তিপুজা, মিলাদ কিয়ামধারী বা এজাতীয় বিদআতি কাজে রত না হতে হবে। পূর্ণাঙ্গ শরীয়তের অনুসারী হওয়া আবশ্যক।

هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ (٦٢:٢ তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত। -সূরা জুমআ-২ قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ (٨٧:١٤ নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে,যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে। -সূরা আলা-১৪ قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا (٩١:٩ যে নিজেকে শুদ্ধ করে,সেই সফলকাম হয়। -সূরা শামস-৯

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৩ এপ্রিল, ২৩