আজানের সময় কথা সম্বলিত হাদীসের হুকুম

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসমসজিদ-মাদ্রাসার বিধান৮ এপ্রিল, ২১

প্রশ্ন

আমি একটা কিতাবে পড়েছি আযানের সময় কথা বলা হারাম এমনকি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, ধর্মীয় কথাবার্তাও জায়েজ নয়। কিন্তু কিছুদিন আগে আমাকে এক ভাই বলল, হাদীসের ভিত্তিতে আযানের সময় কথা বলা হারাম ফতোয়া দেয়া হয়েছে সেটা মওজু। বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ রইলো।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

"আজানের সময় কথা বলা হারাম" কথাটি সহীহ নয়। তবে আজানের সময় কথা বলা ঠিক নয়। বরং তিলাওয়াত, জিকির ও ধর্মীয় কথাবার্তা বন্ধ করে আজানের জবাব দেয়া উচিত। তবে যদি তা বন্ধ না করে তথা আজানের জবাব না দেয় তাতে গোনাহ হবে না। আজানের জবাব দেয়া উচিত। সে সময় কথা বলা ঠিক নয়।

আজানের সময় জবাব দেবার আদেশ সম্বলিত হাদীস বুখারীতে এসেছে- عن أبي سعيد الخدري أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ( إذا سمعتم النداء فقولوا مثل نما يقول المؤذن ) • হযরত আবূ সাঈদ খুদরী e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেনঃ যখন তোমরা আজান শোন! তখন তা’ই বল যা মুয়াজ্জিন বলে। তথা আজানের জবাব দাও। -সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৮৭৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং- ৫২২, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২০৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৭২০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১৬৩৭, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৭৮৪

তবে আজানের সময় কথা বললে ৪০ বছরের আমল নষ্ট হবে, বা ঈমান চলে যাবে এমন কথা ঠিক নয়। যে হাদীসের ভিত্তিতে তা বলা হয় সেটি হাদীস নয় বলে মুহাদ্দিসীনে কেরাম মত দিয়েছেন। من تكلم عند الأذان خيف عليه زوال الإيمان যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ঈমান চলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ হাদীসটিকে আল্লামা সাগানী i জাল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। -আল মাওজুআতুস সাগানী, হাদীস নং-১৪৫; রিসালাতুস মাওযুআত পৃঃ ১২; কাশফুল খাফা, হাদীস নং- ২৪৩৯ এমনিভাবে "আজানের সময় কথা বললে ৪০ বছরের নেকী নষ্ট হয়ে যায়" একথাটিও রাসুল c এর হাদীস নয়।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৮ এপ্রিল, ২১